শীতে ঠোঁট ফাটা দূর করার ৫টি কার্যকর উপায় জেনে নিন

শীতের শুষ্ক বাতাস ঠোঁটের আর্দ্রতা কেড়ে নেয়, ফলে ঠোঁট ফেটে যায়। সঠিক যত্ন ও কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

‎শীতকাল এলে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়। ত্বকের তুলনায় ঠোঁটের স্তর পাতলা হওয়ায় এবং তেল উৎপাদনকারী গ্রন্থি না থাকায় এর প্রভাব প্রথমেই পড়ে ঠোঁটে। অবহেলার কারণে ঠোঁট দ্রুত শুষ্ক হয়ে ওঠে, যা পরে যন্ত্রণাদায়ক ফাটল ও ক্ষতের সৃষ্টি করে।

‎সমস্যার মূল কারণ: শীতকালে কেন ফাটে ঠোঁট?

  • ‎দিনে কয়েকবার লিপ বাম লাগান
  • ‎ঘুমানোর আগে মোটা করে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগান
  • ‎বেশি পানি পান করুন
  • ‎ঠোঁট কামড়ানো বা চাটা বন্ধ করুন
  • ‎খুব ফেটে গেলে অ্যালোভেরা বা শিয়া বাটার ব্যবহার করুন
  • ‎কুসুম গরম পানি দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে আলতোভাবে মুছুন
  • ‎সপ্তাহে ১–২ বার হালকা চিনি–মধুর স্ক্রাব
  • ‎স্ক্রাব শেষে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগান

‎শীতকালে বাতাসের শুষ্কতা দেহের ত্বক থেকে পানি শোষণ করে নেয়। ঠোঁটের গঠনগত দুর্বলতার কারণে এখানে প্রভাব আরও দ্রুত হয়। ঠাণ্ডা বাতাসে সরাসরি চলাফেরা, ঘরের হিটার বা গরমের উৎসের কাছে থাকা এবং পর্যাপ্ত পানি পান না করা ঠোঁটের আর্দ্রতা আরও কমিয়ে দেয়।

‎ঠোঁট চাটার অভ্যাস: এটি একটি সাধারণ অভ্যাস, যা সমস্যাকে জটিল করে তোলে। লালা সাময়িকভাবে ঠোঁট ভেজালেও দ্রুত শুকিয়ে গিয়ে উল্টো ঠোঁটকে আরও বেশি শুষ্ক করে তোলে।

‎পানির ঘাটতি: শীতে অনেকে কম পানি পান করেন। শরীরের পানিশূন্যতার প্রথম লক্ষণগুলোর মধ্যে ঠোঁটের শুষ্কতা অন্যতম।

পুষ্টিহীনতা: ভিটামিন বি২, বি৩, বি১২ এবং আয়রনের ঘাটতি থেকেও ঠোঁট বারবার শুকিয়ে ও ফাটতে পারে।

‎ঠোঁট ফাটা দূর করার ৫টি কার্যকর উপায়

‎শীতকালে ঠোঁটের যত্ন নিতে এবং ফাটা ঠোঁটের সমস্যা কমাতে কিছু সহজ অভ্যাস ও প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে।

‎১. ঠোঁট চাটার অভ্যাস ত্যাগ করুন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন

‎ঠোঁট শুষ্ক মনে হলেই জিভ দিয়ে বারবার চাটা থেকে বিরত থাকুন। এই অভ্যাসটিই বারবার ঠোঁট ফাটার প্রধান কারণ। পরিবর্তে, ঠোঁট শুষ্ক অনুভব হলে লিপ বাম বা তেল ব্যবহার করুন। একই সঙ্গে, শরীরকে ভেতর থেকে হাইড্রেটেড রাখতে সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি।

‎২. নিয়মিত প্রাকৃতিক উপাদানের আর্দ্রতা ব্যবহার করুন

‎ঠোঁটের আর্দ্রতা ধরে রাখতে প্রাকৃতিক উপাদান দারুণ কার্যকর। দিনে দুই থেকে তিনবার ঠোঁটে নিম্নলিখিত উপাদানগুলোর যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন:

‎•নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল: এটি ঠোঁটে একটি সুরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে।

‎• মধু: ঘুমানোর আগে সামান্য মধু ঠোঁটে লাগালে এটি দীর্ঘ সময় নরম থাকে এবং ফাটল কমাতে সাহায্য করে।

‎৩. মৃদু স্ক্রাবিংয়ের মাধ্যমে মৃত চামড়া সরান

‎শীতকালে ঠোঁটের ওপর মরা চামড়া জমে গেলে ঠোঁট আরও রুক্ষ ও শুষ্ক দেখায়। সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন একটি মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করুন। সামান্য মধু ও অল্প পরিমাণ চিনি মিশিয়ে ঘরেই এটি তৈরি করা যায়। মনে রাখবেন, স্ক্রাব করার সময় জোরে ঘষা যাবে না।

‎৪. লিপ বাম নির্বাচনে সচেতন হোন

‎ঠোঁটের যত্নে লিপ বাম অত্যাবশ্যক। এমন বাম বেছে নিন যাতে অতিরিক্ত সুগন্ধি বা রঙ নেই, যা ঠোঁটকে আরও শুষ্ক করে তুলতে পারে। আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে এমন উপাদানযুক্ত বাম ব্যবহার করা উচিত, যেমন—

‎ •পেট্রোলিয়াম জেলি বা বিজওয়াক্স

‎ • শিয়া বাটার

‎ •  ভিটামিন ই সমৃদ্ধ উপাদান

‎ • অ্যালোভেরা

‎৫. রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁট পরিষ্কার করে যত্ন নিন।

‎যদি দিনের বেলা লিপস্টিক বা অন্য কোনো মেকআপ ব্যবহার করেন, তবে রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। মেকআপের অবশিষ্টাংশ ঠোঁটকে শুষ্ক করে দেয়। পরিষ্কার করার পর একটি নরম বাম বা প্রাকৃতিক তেল লাগিয়ে ঘুমান।

‎বিশেষ সতর্কতা: ঠোঁট কামড়ানো বা খুঁটিয়ে চামড়া তোলা থেকে বিরত থাকুন। এতে ক্ষত বাড়ে ও জ্বালা তৈরি হয়। যদি উপরোক্ত উপায় গুলো অনুসরণ করার পরও ঠোঁট ফাঁটা বন্দনা হয় সেক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।

‎শীতে ঠোঁটের যত্ন নিয়ে সাধারণ জিজ্ঞাসা

১. শীতকালে ঠোঁট ফেটে যায় কেন?

‎শীতের সময় বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়, শরীর পানিশূন্য থাকে এবং ঠোঁটে তেলগ্রন্থি না থাকায় দ্রুত শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। বারবার ঠোঁট চাটা, ধুলা–দূষণ ও রোদও ঠোঁট ফাটার কারণ।

‎২. শীতে ঠোঁটের জন্য কোনটি ভালো?

‎এমন লিপ বাম বেছে নিন যাতে পেট্রোলিয়াম জেলি, শিয়া বাটার, বীজ ওয়াক্স, গ্লিসারিন, অ্যালোভেরা অথবা নারকেল/জোজোবা তেল এই উপাদানগুলোর অন্তত একটি থাকে। এগুলো ঠোঁটকে দীর্ঘসময় আর্দ্র রাখে।

‎৩. ঠোঁট ফাটলে কি করা উচিত?

‎৪. ঠোঁট চাটা বন্ধ করার উপায় কী?

‎ঠোঁট শুকনো লাগলেই লিপ বাম লাগান, পানি খান, অভ্যাসগত চাটা এড়াতে মাইন্ডফুলনেস রাখুন।।

‎৫. ঠোঁট পরিষ্কার করার উপায় কী?

‎৬. শীতে নারকেল তেল কি ঠোঁটের জন্য ভালো?

‎হ্যাঁ, নারকেল তেল ঠোঁট নরম রাখে, শুষ্কতা কমায় এবং হালকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল। রাতে লাগালে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতরপূর্বতন